বাংলাদেশিদের সময় অপচয় করার অভিজ্ঞতায় নতুন মাত্রা যোগ করতে ব্ল্যাকআউট বাডি নামে একটি নতুন অ্যাপ আসছে, যা দেশের নিরবচ্ছিন্ন লোডশেডিংয়ের আপডেট দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। যাঁরা প্রতিদিনের “কখন কারেন্ট যাবে” খেলা থেকে মুক্তি চান তাদের জন্য এই অ্যাপটি অত্যাবশ্যকীয় হয়ে উঠেছে।

“আমরা লক্ষ্য করেছি যে যাঁরা নিজের কষ্টটাকে উদযাপন করতে পছন্দ করেন, তাদের জন্য বাজারে কোনো সঠিক সমাধান নেই,” বলেন অ্যাপটির নির্মাতা সাইফুল কবির। “এখন আর জুম মিটিং বা নেটফ্লিক্সের মাঝখানে ওয়াইফাই বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয় থাকতে হবে না। ব্ল্যাকআউট বাডি আপনাকে জানাবে ঠিক কখন আশা ছেড়ে দেওয়া উচিত আর পাওয়ার ব্যাংক চার্জে লাগানো উচিত।”

…এই অ্যাপ আমাদের বিদ্যুতের মতোই অনির্ভরযোগ্য…

ব্ল্যাকআউট বাডি অত্যাধুনিক এআই প্রযুক্তি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অভিযোগের উপর নির্ভর করে – আপনাকে আপনার এলাকার লোডশেডিংয়ের রিয়েল-টাইম আপডেট প্রদান করবে।

অ্যাপটির অনন্য বৈশিষ্ট্য

  • তাৎক্ষণিক লোডশেডিং নোটিফিকেশন: যখন আপনার গুরুত্বপূর্ণ অনলাইন ক্লাস বা ডেডলাইন বাদ দিতে হবে তখনি আপনি নোটিফিকেশন পেয়ে যাবেন।

  • ওয়াইফাই ডাউনটাইম ট্র্যাকার: বুঝতে পারবেন কতক্ষণ আপনাকে অফলাইন জীবনের বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হবে, যা দেশের মানুষের জন্য খুবই পরিচিত বিষয়।

  • ব্যঙ্গাত্মক মোড: কষ্ট কাটাতে যারা একটু হাসির প্রয়োজন বোধ করেন তাদের জন্য রয়েছে ব্যঙ্গাত্মক নোটিফিকেশন, যেমন: “অভিনন্দন! আপনার বিদ্যুৎ আবার চলে গেছে। তা এই সময়টা আপনার জীবনের ভুলগুলো নিয়ে ভাবুন।”

  • সোশ্যাল শেয়ারিং: আপনার এলাকার ফেসবুক গ্রুপে লোডশেডিংয়ের আপডেট শেয়ার করতে পারবেন, যেন রাগের বন্যায় সবাই একসঙ্গে ভাসতে পারে, যদিও স্ট্যাটাস ঠিকমতো দেখতেও পারবে না কেউ।

সমালোচকরা বলছেন, ‘বোঝাই যাচ্ছে এটি বাংলাদেশের অ্যাপ!’

ব্যবহারকারী এবং সমালোচকরা অ্যাপটিতে মুগ্ধ। “এই অ্যাপ আমাদের বিদ্যুতের মতোই অনির্ভরযোগ্য,” বললেন একজন ব্যবহারকারী। “নোটিফিকেশন বলে বিকেল ৪টায় বিদ্যুৎ যাবে, কিন্তু আসলে ৩:৪৫-এই চলে যায়। এরকম একটা অ্যাপ পাওয়া আসলেই আনন্দের, যা আমাদের জাতীয় অনিরাপত্তার মনোভাবটাকে এত সুন্দরভাবে ধরে রেখেছে।”

“আগে যখন বিদ্যুৎ চলে যেত, আমি অসহায় বোধ করতাম,” বললেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ফারহানা রহমান। “এখন ব্ল্যাকআউট বাডি থাকার কারণে আমি অসহায় বোধ করি, কিন্তু অন্তত অসহায়ত্বের সময়কালটা জানতে পারছি।”

সরকারের প্রতিক্রিয়া: ‘কোন মন্তব্য নেই’

প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় জানায় যে এই অ্যাপটি “অনাবশ্যক উসকানি” এবং তারা নাগরিকদের “জীবনের অনিশ্চয়তাকে উপভোগ করতে শিখতে” পরামর্শ দিয়েছে।

অ্যাপটির নির্মাতা সাইফুল কবির ইতোমধ্যে পরবর্তী আপডেট নিয়ে কাজ করছেন: একটি ফিচার যা বলবে গ্রাহক সেবার জবাব পাওয়ার জন্য ঠিক কতক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে, যখন আপনার বিদ্যুৎ ফিরেও আসবে, কিন্তু ওয়াইফাই কাজ করবে না।

অ্যাপ পেইডরিভিউ লোডশেডিং