ঢাকার রাস্তাগুলো যখন টানা বর্ষণের কারণে অস্থায়ী খালের রূপ নিয়েছে তখন সিটি কর্পোরেশন অভিনবভাবে যাতায়াতের সুবিধা দিতে ‘সাঁতার কেটে ভাড়া বাঁচান’ উদ্যোগের ঘোষণা দিয়েছে।
…এখন ২০২৪, এই মুহূর্তে পানিই ঢাকার বিশেষ সৌন্দর্য…
“যানজটে আটকে থাকার চেয়ে কেন আপনি স্রেফ ফ্রিস্টাইল করে অফিসে পৌঁছে যাবেন না?” অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্যে লাইফ জ্যাকেট পরা মেয়র আবুল কালাম এমনটা বলেন। “জাতী হিসেবে আমরা সবসময় আমাদের সহনশীলতার জন্য পরিচিত ছিলাম, এখন আমরা আমাদের ব্রেস্টস্ট্রোকের জন্যও পরিচিত হবো।”
এই উদ্যোগটি আসে যখন টানা বৃষ্টিপাত ঢাকার প্রধান রাস্তাগুলোকে নদীপথে পরিণত করেছে, গাড়িগুলো আটকে রয়েছে, আর অফিসগামী পথচারীরা তাদের সকালে হাঁটতে হাঁটতে কোমরসমান পানির মধ্যে ডুবে যাচ্ছে। “ড্রেইন পরিষ্কারের চিন্তা আমরা ছেড়ে দিয়েছি,” সিটি কর্পোরেশনের একজন মুখপাত্র স্বীকার করেন। “এখন ২০২৪, এই মুহূর্তে পানিই ঢাকার বিশেষ সৌন্দর্য।”
উদ্যোগটিকে সমর্থন জানিয়ে সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে প্রধান রুটগুলোতে ‘সাঁতার লেন’ চিহ্নিত করা হবে, এবং বিপজ্জনক মোড়গুলোতে লাইফগার্ড নিয়োগ করা হবে। মোটরযানগুলো এখন সাঁতারুদের অগ্রাধিকার দেবে, এবং কোনো স্পিডবোট ৫ নট গতিবেগের বেশি চললে জরিমানা করা হবে।
এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে স্থানীয় স্কুলগুলোতে বিনামূল্যে সাঁতার শেখানো হচ্ছে। “এটা এক ঢিলে দুই পাখি,” বলেন নগর পরিকল্পনাবিদ ফারিদ হোসেন। “আপনি আপনার কার্ডিও-ও করছেন, যানজট এড়াচ্ছেন, আর সত্যি বলতে—গর্তগুলো নিয়েও চিন্তা করার দরকার নেই কারণ আপনি এর উপর দিয়ে সাঁতরে যাচ্ছেন।”
প্রাথমিক উৎসাহ থাকা সত্ত্বেও এই উদ্যোগটি কিছু কর্মজীবী মানুষের কাছ থেকে সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে। “আমি সাঁতার জানি না, আর এখন আমি দেরিও করছি এবং ভিজেও যাচ্ছি,” অভিযোগ করেন অফিস কর্মী রাসেল, যিনি মিরপুরে ব্যাগটা শুকনো রাখতে চেষ্টা করতে করতে সাঁতার কেটে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। “যখন তারা ডিঙ্গি চালানোর প্রস্তাব দিয়েছিল, এটা সেই সময়ের চেয়েও খারাপ।”
এ ধরনের উদ্বেগের প্রেক্ষিতে, সিটি কর্পোরেশন একটি পাইলট প্রকল্প ঘোষণা করেছে, যেখানে “ভাসাও” অ্যাপের মাধ্যমে নামে স্থানীয় মাঝিদের ছোট নৌকা ডাকা যাবে।
“আমরা ইতিমধ্যে সুফল দেখতে পাচ্ছি,” বলেন এক সরকারি কর্মকর্তা। “রাস্তাগুলো কখনো এত গাড়িশূন্য দেখিনি।”
নদী ট্রাফিক প্রকল্প